জলার চিল | Eastern Marsh Harrier | Circus spilonotus
জলার চিল | ছবি: ইন্টারনেট দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পরিযায়ী হয়ে আসে। দেখা মেলে শীত মৌসুমে। বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি উত্তর-পূর্ব ভারত, দক্ষিণ-পূর্ব সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, ফিলিপাইন, উত্তর-পূর্ব চীন, জাপান, তাইওয়ান, কোরিয়া ও ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত। প্রাকৃতিক আবাসস্থল জলাভূমির ধানক্ষেত, গমক্ষেত, উন্মুক্ত বনভূমি, ছোট নদ-নদী, জলাশয়ের আশপাশ। ক্ষেত খামারের ওপর চক্কর দিয়ে ইঁদুর, ব্যাঙ, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী খোঁজে। বিচরণ করে একাকী কিংবা জোড়ায়। অনেক সময় ছোটদলেও দেখা যায়। চেহারায় হিংস্র তার ছাপ লক্ষ্য করা গেলেও স্বভাবে তত হিংস্র নয়। বিশ্বে এদের অবস্থান সন্তোষজনক নয়। মূলত শস্যক্ষেতে ব্যাপক কীটনাশক ব্যবহার এবং আবাসন সংকটের কারণে প্রজাতিটি হুমকির মুখে পড়েছে এবং প্রজননে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে আইইউসিএন এদের ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। পাখির বাংলা নাম: ‘জলার চিল’, ইংরেজি নাম: ‘ইস্টার্ন মার্স হ্যারিয়ার’, (Eastern Marsh Harrier), বৈজ্ঞানিক নাম: Circus spilonotus | এরা ‘পূর্বের পানকাপাসি’ নামেও পরিচিত। প্রজাতিটি দৈর্ঘ্যে ৪৮-৫৮ সেন্টিমিটার। প্রসারিত পাখা ১৩০-১৩৭ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় সামান্য পার্থক্য রয়েছে। পুরুষের তুলনায় স্ত্রী পাখি আকারে বড়। পুরুষ পাখির মাথা ও ঘাড় ফ্যাকাসে ধূসরাভ হলদে। পিঠ ও দেহতল কালচে বাদামি। লেজ ধূসর। অপরদিকে স্ত্রী পাখির মাথা বাদামি। লেজ সাদাটে। শিং কালো রঙে ঠোঁটের অগ্রভাগ বড়শির মতো বাঁকানো। ঠোঁটের গোড়া হলদেটে। চোখ বাদামি। পা ও পায়ের পাতা হলুদ, নখ কালো। যুবাদের রং ভিন্ন। প্রধান খাবার: মাছ, ব্যাঙ, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, ইঁদুর, বড় পোকামাকড়, ফড়িং ও পঙ্গপাল। প্রজনন সময় মধ্য এপ্রিল থেকে মে। বাসা বাঁধে ঝোপের ভেতর, জলাভূমির কাছে মাটিতে চিকন ডালপালা, নলখাগড়া, ঘাস দিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৪-৭টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৩৩-৩৮ দিন। শাবক ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে উড়তে শেখে। লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 31/03/2017