
সাইবেরিয়া থেকে পরিযায়ী হয়ে আসে এ দেশে। শীত কেটে গেলে দ্রুত ফিরে যায়। বসন্ত এলে নিজ বাসভূমিতে গিয়ে ডিম পাড়ে । আকারে চড়ুই পাখির চেয়ে সামান্য বড়। ‘বাটান’ পরিবারের সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতির পাখি এরা। সমুদ্র-নদী-জলাশয়ের পাড়ে কাদামাটিতে বা বালুকারাশিতে বিচরণ করে। জোয়ার-ভাটা হয় এমন এলাকা এদের বিচরণের উপযুক্ত স্থান। বিশেষ করে কাদামাটি এলাকা বেশি পছন্দ। ঝাক বেঁধে শিকারে বের হয়। মাঝে মধ্যে একাকীও দেখা যায়। ওড়ার সময় ডাকে ‘কিপ কিপ’ সুরে। অন্য সময় ডাকে ‘টিট’ সুরে। নিরীহ স্বভাবের পাখি। বিবাদে জড়ায় না পারতপক্ষে।
এদের বাংলা নাম:‘বামন চাপাখি’, ইংরেজি নাম: ‘লিটল স্টিনট'(Little Stint), বৈজ্ঞানিক নাম: Calidris minuta, গোত্রের নাম: ‘স্কোলোপাসিদি। পশ্চিম বাংলার বিশিষ্ট পাখি বিশারদ অজয় হোম এ পাখির বাংলা নাম দিয়েছিলেন পানলৌয়া। এছাড়াও আদর করে অনেকে এদেরকে সৈকতফুলী নামে ডাকে।
লম্বায় এরা ১৫-১৬ সেন্টিমিটার। ঠোঁট সোজা, কালো, সরু ও ছোট। গলা সাদা। মাথা থেকে পিঠ পর্যন্ত বাদামি। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের পিঠের উপরে ভি আকারের দাগ দেখা যায়। শীতে রঙ বদলিয়ে গাঢ় ধূসর হয়। প্রজনন মৌসুমে পিঠের দিক বাদামির ওপর কালো হয়। বুক থেকে লেজের নিচে সাদা। পা কালো। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম।
এরা সাধারণত ছোট শামুক, কীটপতঙ্গ শিকার করে। প্রজনন সময় মার্চ থেকে এপ্রিল। জলাশয়ের কাছাকাছি ছোট ঝোঁপ জঙ্গলের ভেতর মাটির ওপরে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিম ফুটে ১৮-২০ দিনে।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, 07/07/2013