
পান্থ-পরিযায়ী পাখি (চলার পথে যে পাখি স্বল্প সময়ের জন্য কোন অঞ্চলে বিচরণ করে)। আমাদের দেশে আসে নভেম্বরের দিকে। বিদায় নেয় মার্চের মধ্যেই। বাটান পরিবারের পাখিদের মধ্যে এরা মাঝারি আকৃতির। উপকূলীয় এলাকার জলাশয় বা নদ-নদীর বালুকাময় সৈকতে দেখা যায় এদেরকে। জলের ধার ঘেঁষে দ্রুত হেঁটে খাবার খুঁজে চলে। কীট-পতঙ্গ প্রধান খাবার। নুড়ি পাথর কিংবা মাটির ঢেলা সরিয়ে কীট-পতঙ্গ খুঁজে বের করে। তাই এদের নামকরণের সঙ্গে ‘নুড়ি’ শব্দটি যুক্ত হয়েছে। সুর সুমধুর নয়। ডাকে ‘টুক-টুকাটুক’ শব্দে। অপেক্ষাকৃত ছোট দলে বিচরণ করে।
পাখির বাংলা নাম: ‘লাল নুড়িবাটান’, ইংরেজি নাম: ‘রাড্ডি টার্ন স্টোন, (Ruddy turnstone) | বৈজ্ঞানিক নাম: Arenaria interpres | গোত্রের নাম: ‘স্কোলোপাসিডি’| এরা ‘পীত পাথরে বাটান বা পাথর-ঘুরানি বাটান’ নামেও পরিচিত।
লম্বায় ২২-২৪ সেন্টিমিটার। ঠোঁট কালো, খাটো ও শক্ত। প্রজনন মৌসুমে গায়ের রঙ বদলায়। এ সময় মাথা, গলা, বুক সাদাটে দেখায়। এর ওপর উজ্জ্বল কালো ছোপ নজরে পড়ে। দেহের উপরাংশের পালকে পাটকিলের ওপর সাদা-কালো ছোপ। স্ত্রী পাখির রঙে হেরফের রয়েছে। এদের মাথার রঙ খানিকটা নিষ্প্রভ এবং সাদাটে ভাবটা কম। প্রজনন মৌসুমের বাইরে স্ত্রী-পুরুষ পাখি উভয়ের দেহের উপরাংশের রঙ অনুজ্জ্বল হয়ে পড়ে। এ সময় মাথার রঙ বদলে গাঢ় বাদামি রঙ ধারণ করে। পা খাটো, কমলা লাল। লেজ খাটো। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের রঙ অনেকটাই ফিকে।
প্রধান খাবার: ভূমিজ কীট-পতঙ্গ। এ ছাড়াও জলজ শেওলা খেয়ে থাকে। প্রজনন সময় মে থেকে আগস্ট। প্রজনন ভূমি উত্তর মহাসাগরের আশপাশ এলাকা। বাসা বাঁধে নূড়ি পাথরের ওপর ঘাস, লতা-পাতা বিছিয়ে। ডিম পাড়ে ২-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২২-২৪ দিন।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, 29/03/2020