
এদেশেরই পাখি। দেশের সর্বত্রই নজরে পড়ে। গবাদি পশুর চারণভূমিতে এদের দেখা যায় বেশি। নিরীহ স্বভাবের। বিচরণ ক্ষেত্রে একাকি কিংবা ছোট দলে। গবাদি পশুর কাছাকাছি অথবা পিঠেচড়ে ঘুরে বেড়ায়। গবাদি পশুর শরীরে লেগে থাকা জোঁক, এঁটুলি এদের প্রিয় খাদ্য। সে কারণে গরু-মোষের সঙ্গে এদের বিশেষ সখ্য। এরা যেমন গরু-মোষের কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে তেমনি গরু-মোষও এঁটুলি বা জোঁকের হাত থেকে রেহাই পেতে এদের বেশ প্রশ্রয় দেয়। গবাদি পশুদের সঙ্গে এমন দহরম-মহরমের কারণে এদের নামের অদ্যাক্ষরের সঙ্গে ‘গো’ শব্দটি যুক্ত হয়েছে।
এ পাখির বাংলা নাম: গো-বক, ইংরেজি নাম: ক্যাটল ইগ্রেট (Cattle egret), বৈজ্ঞানিক নাম: Bubulcus ibis। গোত্রের নাম: আরডিয়িদি।
প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ৫১-৫৮ সেন্টিমিটার। হালকা পাতলা গড়ন। দেহের সমস্ত পালক ধবধবে সাদা। প্রজনন সময়ে রং বদলায়। তখন মাথা, ঘাড়, পিঠ, গলার নিচে এবং বুক সোনালি বা বাদামি-কমলা রং ধারণ করে। ঠোঁট খাটো, হলদেটে। ঠোঁটের গোড়া পালকহীন সবুজাভ-হলুদ। পা ও আঙ্গুল কালো। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম হলেও পুরুষ পাখি আকারে খানিকটা বড়।
প্রধান খাবার: পোকামাকড়, জোঁক, ব্যাঙাচি ও ফড়িং। মাছের প্রতি এদের আসক্তি খুবই কম। প্রজনন মৌসুম মে-জুলাই। বাসা বাঁধে জলাশয়ের কাছাকাছি উঁচু গাছে। এ ছাড়াও বাঁশঝাড়ে এরা কলোনি টাইপ বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২১-২৩ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় নেয় ৪৫ দিনের মতো।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, 04/04/2020