
দুর্লভ আবাসিক পাখি এটি। দেশে যত্রতত্র নজরে পড়ে না। তবে দুই দশক আগেও বেশ নজরে পড়ত। বর্তমানে ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিছু জায়গায় যত্সামান্য দেখা যায়। বাংলাদেশ ছাড়া এদের দেখা যায় উত্তর ও পূর্ব ভারত, পাকিস্তানের নিম্ন সিন্ধু, নেপাল ও শ্রীলংকায়। জলাশয় এলাকা এড়িয়ে চলে। শুকনো ভূমি বেশি পছন্দ। বিচরণ করে ছোট ঘাসে ভরা জমিতে। ফসল কাটার পরেও ক্ষেতে বিচরণ করতে দেখা যায়। জ্যোত্স্নারাতে এরা ছোট দলে শিকারে বের হয়। বিশেষ করে পূর্ণিমায় সারারাত মাঠ ঘাটে চষে বেড়ায়। শিকার ধরে দ্রুত হেঁটে হেঁটে। প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় জোড়ায় থাকে। প্রজননের বাইরে ছোট দলে চলাফেরা করে। ডাকে ‘টিয়ি..ই..টিয়ি ই..’ সুরে।
পাখির বাংলা নাম: ‘হলদেগাল টিটি’, হলদে লতিকা হট্টিটি, ইংরেজি নাম: ‘ইয়েলো ওয়াটলড ল্যাপউইং’ (Yellow-wattled Lapwing), বৈজ্ঞানিক নাম: Vanellus malabaricus| দেশে প্রায় পাঁচ প্রজাতির হট্টিটি পাখি নজরে পড়ে।
লম্বায় ২৭ সেন্টিমিটার। ওজন ১১০ গ্রাম। মাথায় টুপি আকৃতির কালো পালক, দু’পাশে সরু সাদা টান। থুতনি কালো। গলা ধূসর-পাটকিলে। পিঠ বালি-পাটকিলে। বুক থেকে নিচের দিক সাদা। বুকের শেষ থেকে সাদা শুরু হবার আগে রয়েছে সরু কালো লম্বা দাগ। লেজ কালো। কপাল থেকে শুরু হয়েছে ত্রিকোণ মাংসল লতিকা, যার পুরোটাই চকচকে হলুদ। চঞ্চুর অগ্রভাগ কালো, গোড়া হলদে-সবুজ। পা উজ্জ্বল হলুদ। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। প্রাপ্ত বয়স্কদের রঙ কিছুটা উজ্জ্বল।
প্রধান খাবার: ভূমিজ কীটপতঙ্গ। প্রজনন সময় মার্চ থেকে আগস্ট। মাটির খোদলে বাসা বাঁধে। উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করে শুকনো পাতা, গবাদি পশুর মল, মাটির ঢেলা ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৭-৩০ দিন।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন 07/05/2020