
পরিযায়ী পাখি। শীতে কাশ্মীরাঞ্চল থেকে আসে আমাদের দেশে। আশ্রয় নেয় সুপেয় জলের জলাশয়ের আশপাশে। নির্জন পরিবেশ পেলে প্রায় সারাদিনই ঝোপ-জঙ্গলের ভেতর ঘুরঘুর করে কাটায়। সম্ভবত এ কারণেই এদের নাম ‘ঘুরঘুরি’। অন্যসব পরিযায়ী পাখির মতো এরা দলবদ্ধভাবে বিচরণ করে না খুব একটা। খুব বেশি হলে জোড়ায় জোড়ায় বিচরণ করে। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে জলজ উদ্ভিদের ওপর দিয়ে হেঁটে বেড়ায়। শাপলা কিংবা পদ্মপাতার ওপর দিয়ে হাঁটতে খুব স্বচ্ছন্দবোধ করে। শিকারে বের হয় ভোরে অথবা সন্ধ্যার আরো আগে এ সময় এরা খুব ‘ক্রোক-ক্রোক-টিউক’ স্বরে ডাকাডাকি করে। আকার আকৃতিতে ডাহুকের মতো হলেও রঙটা ভিন্ন। তবে এরা ডাহুক গোত্রেরই পাখি।
এ পাখির বাংলা নাম: রাঙ্গা ঘুরঘুরি , ইংরেজি নাম: ‘রাড্ডি ব্রেস্টেড ক্রেক’ (Ruddy breasted Crake), বৈজ্ঞানিক নাম: Porzana fusca | গোত্রের নাম:‘রাল্লিদি’। এরা ‘রাঙা বুক বাদা কুক্কুট’ নামেও পরিচিত।
লম্বায় ২২-২৪ সেন্টিমিটার। মাথার তালু, কপাল, মুখের দু’পাশ লালচে-বাদামি। ঘাড় থেকে পিঠ ও লেজের ডগা পর্যন্ত জলপাই-বাদামি। গলার মাঝখানটা সাদাটে। বুক ও পেট নিষ্প্রভ বাদামি। চোখ উজ্জ্বল লাল। ঠোঁটের ওপরের দিকটা সবুজাভ বাদামি, যা কালচে দেখায়। নিচের অংশ হলদেটে। পা ও আঙুল লালচে-কমলা। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্কদের রঙ ভিন্ন।
প্রধান খাবার: জলজ উদ্ভিদের বীজ, কেঁচো ও কীটপতঙ্গ। প্রজনন মৌসুম মে থেকে আগস্ট। কাশ্মীরাঞ্চলের হরদের কাছাকাছি ঝোপ ঝাড়ে কিংবা ঘাসে ভরা জমিতে লতাপাতা অথবা শুকনো ঘাস দিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৬-৯টি।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, 13/10/2020
আমি আলম স্যারের মতো একজন বন্যপ্রাণী গবেষক হতে চাই।