
বিরল দর্শন। প্রচণ্ড শীতে পরিযায়ী হয়ে আসে দেশে। সুন্দরবন ব্যতীত দেশের প্রায় বনাঞ্চলেই যৎসামান্য নজরে পড়ে। বিচরণ করে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আর্দ্র নিম্নভূমির বনাঞ্চলে এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় পার্বত্য অরণ্যে। স্যাঁতসেঁতে এলাকা দারুণ পছন্দ এদের। বেশিরভাগ সময় একাকী বিচরণ করে। স্বভাবে মোটামুটি শান্ত। মাঝারি আকৃতির গাছের চিকন ডালে বসে অকারণে এদিক সেদিক ঘাড়টাকে ফেরাতে থাকে। কণ্ঠস্বর সুমধুর। গান গায় ‘সিট-সি-সি’ সুরে। বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, চীন, কম্বোডিয়া, তাইওয়ান, লাওস, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত।
যে পাখিটি নিয়ে লিখছি তার বাংলা নাম: ‘ধলাভ্রু চুটকি’, ইংরেজি নাম: স্নোয়ি ব্রোয়েড ফ্লাইকেচার (Snowy-browed Flycatcher), বৈজ্ঞানিক নাম: Ficedula hyperythra | এরা ‘সাদাভ্রু চটক’ নামেও পরিচিত।
দৈর্ঘ্য কম-বেশি ১১-১৩ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় সামান্য পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ পাখির চোখের ওপর মোটা সাদাভ্রু। থুতনি, কপাল, চোখের সামনের দিক কালচে। মাথা পিঠ গাঢ় নীল। ডানার মধ্য পালক লালচে। গলা এবং বুক লালচে-কমলা। পেট সাদা। স্ত্রী পাখির ভ্রু কমলা-বাদামি। বুকে ফুটকি। ডানার মধ্য পালক এবং লেজ লালচে। উভয়ের ঠোঁট শিঙ কালো। পা ধূসর।
প্রধান খাবার: শুককীট, মাকড়সা, কেঁচো ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে অক্টোবর। শৈবাল বা তন্তু দিয়ে গাছের ডালে কাপ আকৃতির বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ২-৪টি।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 05/06/2015