কালো পেঁচা | Brown Hawk owl | Ninox scutulata

4601
কালো পেঁচা | ছবি: ইন্টারনেট

প্রিয় পাঠক, মুকিত মজুমদার বাবু সম্পাদিত ‘প্রকৃতি বার্তা’র (১ম বর্ষ ১ম সংখ্যায়) পেঁচা নিয়ে ফিচার পাঠে জানতে পারি যে, একটি পেঁচা বছরে প্রায় ৭০০টি ইঁদুর খেতে সক্ষম। আর একটি ইঁদুর বছরে ১০ কেজি ফসল সাবাড় করতে সক্ষম। অথচ সেই উপকারী বন্ধু পেঁচাকে অলুক্ষণে বলে গালি দেই আমরা। আর ‘কালো পেঁচা’ হলে তো কথাই নেই, বেশি বেশি অলুক্ষণে বলি ওদের ভয়ঙ্কর কণ্ঠস্বরের কারণে। ওরা এক নাগাড়ে ‘কু-উক-কু-উু-কু-উক’ সুরে ডাকতে থাকলে মানুষের পিলে চমকে ওঠে।

মানুষের ধারণা এই বুঝি কোনো বিপদ হানা দিচ্ছে পেঁচার ডাকে। অথচ ভুল সবই ভুল! এরা আমাদের দেশের স্থায়ী বাসিন্দা। সুর্লভ দর্শনও বটে। গ্রামীণ বন-বাদাড়ের বড় গাছের পাতাল আড়ালে কিংবা বাঁশ ঝোঁপে দিনের বেলায় লুকিয়ে থাকে। সাঁঝের বেলায় বেরিয়ে পড়ে শিকারের উদ্দেশ্যে। বিচরণ করে জোড়ায় কিংবা একাকি।

পাখির বাংলা নাম: ‘কালো পেঁচা’, ইংরেজি নাম: ‘ব্রাউন হাক আউল’ (Brown Hawk-owl), বৈজ্ঞানিক নাম: Ninox scutulata| এরা ‘খয়রা শিকারে পেঁচা’ নামেও পরিচিত।

লম্বায় ২৭-৩৩ সেন্টিমিটার। মুখ ও মাথা কালচে-বাদামি। ঘাড় লালচে-বাদামি ফোঁটা। পিঠ গাঢ় বাদামি। দেহতল লালচে-বাদামির ওপর সাদা ডোরা টান। ঠোঁট কালচে, ঠোঁটের গোড়ায় সাদা ফোঁটা। চোখের তারা হলুদ। দূর থেকে চোখের তারা নজরে পড়লে মনে হয় বুঝি জ্বল জ্বল করে জ্বলছে। পা হলুদ, নখ কালো। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা অভিন্ন।

প্রধান খাবার: ইঁদুর, সরীসৃপ, ছোট পাখি, ব্যাঙ ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম মে থেকে জুন। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের দেখা যায়। বাসা বাঁধে গাছের কোটরে। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৩-২৫ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে মাসখানেক।

লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 13/03/2015

মন্তব্য করুন: