
প্রজাতিটি সুলভ দর্শন আবাসিক পাখি। বলা যায় পারিবারিক পাখিও। বাংলাদেশের এমন কোনো স্থান নেই যেখানে ওদের দেখা পাওয়া যায় না। এরা স্বভাবে ভারি চঞ্চল। ভয়ডর তেমন একটা নেই। একেবারে মানুষের কাছাকাছি চলে আসে যে কোনো মুহূর্তে। আস্কারা পেলে আপনার মাথার ওপর দিয়ে উড়ে খড়কুটো নিয়ে আপনার ঘরের ফাঁকফোকরে ইয়া বড় এক বাসা বানিয়ে ফেলবে। তার পর যথারীতি ঘর-সংসার। একদিন-দু’দিন নয়, বছরের পর বছর কাটিয়ে দেবে একই বাসায়। অবশ্য যদি নিরাপদ বোধ করে। এ হচ্ছে চড়–ইদের কীর্তি।
পাখির বাংলা নাম: ‘চড়ই’, ইংরেজি নাম: ‘হাউস স্প্যারো’ (House sparrow), বৈজ্ঞানিক নাম: Passer domesticus|
লম্বায় ১৪-১৬ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির মধ্যে খানিকটা তফাৎ রয়েছে। পুরুষ পাখির মাথা ধূসর। ঘাড় গাঢ় বাদামি। ঘাড়ের দু’পাশ ময়লা সাদা। পিঠ বাদামি। ডানায় বাদামি-কালো রেখার সংমিশ্রণ। ডানার গোড়ার দিকে সাদা পট্টি দেহতলের ময়লা সাদার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। লেজ কালচে। গলা ও থুতনি কালো। ঠোঁট কালো। স্ত্রী পাখির মাথায় আঁকিবুকি দাগ। পিঠ ঝাপসা বাদামির ওপর খাড়া ডোরা। ডানায় সাদা পট্টি। দেহতল ফ্যাকাসে। ঠোঁট ত্বক বর্ণ। উভয়ের চোখ বাদামি।
প্রধান খাবার শস্যদানা। এ ছাড়াও পোকামাকড়, ঘাসের কচিডগা, ফুলের মধু ইত্যাদি খায়। প্রজনন মৌসুম বছরের যে কোনো সময়। তবে একটি স্ত্রী পাখি বছরে তিনবারের অধিক ডিম পাড়ে না। বাসা বাঁধে বসতঘরের ফাঁকফোকরে। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১২-১৪ দিন।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 17/10/2014