নদীচিল | River Tern | Sterna aurantia

2195
নদীচিল | ছবি: ইন্টারনেট

স্থানীয় জলচর পাখি। স্লিম গড়ন। বাংলাদেশ ছাড়াও বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনাম পর্যন্ত। এতদাঞ্চলের স্থায়ী বাসিন্দা এরা। বিশ্বের অন্যান্য স্থানে কমবেশি নজরে পড়ে। বিচরণ করে উপকূলীয় অঞ্চলের বড় নদী, মোহনা কিংবা বড় বিল-ঝিলে। বেশিরভাগই দলবদ্ধভাবে বিচরণ করে।

দেখা যায় একাকী অথবা জোড়ায়-জোড়ায়ও। বছরের যে কোনো সময় এদের সাক্ষাৎ মেলে। জলের ওপর বিক্ষিপ্ত ওড়াউড়ি করে। স্থিরতা এদের মাঝে নেই বললে চলে। শুধুমাত্র মাছের সাক্ষাৎ পেলে ঝপাৎ করে জলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শিকার করা মাছ ঠোঁটের ফাঁকে রেখে উড়তে থাকে। স্বভাবে চঞ্চল হলেও হিংস্র নয়। পারতপক্ষে খুব একটা হাঁকডাক করে না। ওড়ার সময় সামান্য আওয়াজ করে। এছাড়া ভয় পেলে মধুর কণ্ঠে ‘ক্রিয়াক… ক্রিয়াক…’ সুরে ডেকে ওঠে।

পাখির বাংলা নাম: ‘নদীচিল’, ইংরেজি নাম: ‘রিভার টার্ন’, (River tern) বৈজ্ঞানিক নাম: Sterna aurantia| এরা ‘নদীয়া পানচিল’ নামেও পরিচিত।

লম্বায় ৩৮-৪৩ সেন্টিমিটার। শীতে রং বদলায়। এ সময় মাথা থেকে ঘাড় পর্যন্ত কালচে ফুটকির সঙ্গে সরু টান থাকে। গ্রীষ্মে কপাল, ঘাড় কালো দেখায়। দেহের উপরি ভাগ মলিন ধূসর। ডানা সুচালো। লেজ লম্বা, কাস্তের মতো বাঁকানো। লেজের উপরি অংশ কালচে ধূসর। দেহতল সাদাটে। ঠোঁট লম্বাটে হলুদ। পা খাটো, লাল। পায়ের পাতা হাঁসের পায়ের মতো জোড়া লাগোনো।

প্রধান খাবার: মাছ। পচাগলা খাবারের প্রতি আসক্তি রয়েছে। প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে মে। বাসা বাঁধে নদীর কিনারে অথবা দ্বীপাঞ্চলে। বিশেষ করে নির্জন বালুবেলার ওপর খোদল করে বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ৩টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৮-২০ দিন।

লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 19/12/2014

মন্তব্য করুন: