হলদে বক | Yellow Bittern | Ixobrychus sinensis

3790
হলদে বক | ছবি: ইন্টারনেট

জলচর পাখি। আকারে তেমন একটা বড় নয়। দেশের স্থায়ী বাসিন্দা হলেও যত্রতত্র দেখা যায় না। সংখ্যায় অপ্রতুল, তার ওপর স্বভাবে লাজুক। লুকিয়ে-চুকিয়ে থাকে কচুরিপানা, ঢোলকলমি, নলবন, ধানক্ষেত কিংবা জলার ধারের ঝোপজঙ্গলে। দেখতে কিছুটা কানি বকের মতো মনে হলেও এদের গায়ের রঙ ভিন্ন। গায়ের রঙের সঙ্গে প্রাকৃতিক পরিবেশের মিল থাকার দরুন খুব সহজে এরা ঝোপজঙ্গলের ভেতর লুকাতে সক্ষম হয়। বিচরণ করে একাকী। স্থান পরিবর্তনের সময় ‘কেকের-কেকের বা কাকাক-কাকাক’ স্বরে ডেকে ওঠে।

বাংলাদেশ ছাড়াও প্রজাতির দেখা মেলে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে। সংখ্যায় স্থিতিশীল বিধায় বিশ্বে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেনি ‘হলদে বক’ এখনো। যার ফলে আইইউসিএন প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

পাখির বাংলা নাম: ‘হলদে বক’, ইংরেজি নাম: ‘ইয়েলো বিটার্ন’ (Yellow Bittern), বৈজ্ঞানিক নাম: ‘ইক্সোব্রাইকাস সিনেনসিস’ (Ixobrychus sinensis)।

হলদে বক লম্বায় ৩৬-৩৮ সেন্টিমিটার। গলা খয়েরি, আকারে খাটো। ঠোঁট লম্বা, শক্ত মজবুত ও ধারালো। চোখের বলয় হলুদ, মণি কালো। পুরুষ পাখির মাথায় কালো টুপি। দেহের উপরের দিক হলুদ বাদামি। নিচের দিকটা হালকা হলুদ। ডানার পালক হলুদাভ বাদামি হলেও ডানার প্রান্তের পালক কালো। পিঠ গাঢ় বাদামি। ওড়ার পালক কালো। লেজের পালক কালচে। স্ত্রী পাখির মাথায় লালচে বাদামি রেখাযুক্ত পালকে আবৃত। উভয়ের পা ও পায়ের পাতা হলদে-সবুজ। শাবক দেখতে মায়ের মতো হলেও দেহের নিচের দিকে বাদামি রেখা বেশি দেখা যায়।

প্রধান খাবার: ছোট মাছ ও জলজ কীটপতঙ্গ। প্রজনন মৌসুম জুন থেকে সেপ্টেম্বর। জলাশয় সংলগ্ন ঝোপজঙ্গল, কচুরিপানা কিংবা ধানগাছের আড়ালে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৫ দিন।

লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 29/08/2014

মন্তব্য করুন: