কাকঠুঁটো ফিঙে | Crow billed Drongo | Dicrurus annectans

2591
কাকঠুঁটো ফিঙে | ছবি: ইন্টারনেট

গ্রীষ্মমণ্ডলীয় চিরহরিৎ ও নিম্ন ভূমির বনাঞ্চলের বাসিন্দা। দেখতে যেমনি হিংস তেমনি স্বভাবেও। খুব সাহসী পাখি। চিল, বাজদেরকে তেড়ে যায়, মাথায় ছোঁ মারে। ছোট পাখিদের ক্ষতি করে না। ছোট পাখিরা এদের বাসার কাছাকাছি বাসা বাঁধার চেষ্টা করে নিরাপদ থাকতে। কণ্ঠস্বর কর্কশ। ঠোঁট মোটা, দেখতে কাকের ঠোঁটের মতো।

বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মিয়ানমার, চীন, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ও ভিয়েতনাম পর্যন্ত। বিশ্বব্যাপী হুমকি না হলেও দেশে যত্রতত্র দেখা মেলে না। প্রিয় পাঠক, এবার ভিন্ন প্রসঙ্গ। আকবারী ছিদ্দিকা (শিল্পী) মানিকগঞ্জ নিবাসী। প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ। পাখ-পাখালির ভীষণ ভক্ত তিনি। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চান কখন কোথায় কোন পাখির সাক্ষাত মিলবে। আজকের পাখিটি নিয়ে তার দারুণ কৌতূহল, তার সেই কৌতূহল মেটানোর চেষ্টা করলাম।

পাখির বাংলা নাম: ‘কাকঠুঁটো ফিঙে’, ইংরেজি নাম: ‘ক্রো-বিল্ড ড্রোঙ্গো’ (Crow-billed Drongo), বৈজ্ঞানিক নাম: Dicrurus annectans | এরা ‘ভূজঙ্গ’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ২৭-৩২ সেন্টিমিটার। ওজন ৪৪-৬৮ গ্রাম। মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত নীলচে কালো। ডানা এবং লেজের প্রান্ত পালক কালো। লেজের মধ্যখানটা চেরা, মাছের লেজের মতো। চোখ কালো। ঠোঁট ধাতব কালো, মোটা, শক্ত মজবুত। পা কালচে। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় সামান্য তফাৎ রয়েছে।

প্রধান খাবার: কীটপতঙ্গ, ফুলের মধু, টিকটিকি, প্রজাপতি, ভীমরুল, কেঁচো ইত্যাদি। প্রজনন সময় এপ্রিল-জুন। গাছের তেডালের ফাঁকে বাটি আকৃতির বাসা বানায়। বাসা বানাতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে পশুর পশম, সরু লতাঘাস ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৫ দিন।

লেখক: আলম শাইন।কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 20/10/2017

মন্তব্য করুন: