
স্বভাবে পরিযায়ী। প্রাকৃতিক আবাসস্থল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় চিরহরিৎ বনাঞ্চল। দেশে যত্রতত্র দেখা যায় না। সুশ্রী গড়ন। পুরুষ পাখির নজরকাড়া রূপ। স্ত্রী পাখির চেহারা নিষ্প্রভ। অনেক সময় স্ত্রী-পুরুষ পাখিকে ভিন্ন প্রজাতি মনে হয়। পুরুষ পাখির চোখের বলয় সাদা, ফলে দূর থেকে মনে হতে পারে চশমা পরে আছে। তাই অনেকে এদের ‘চশমাপরা পাতা ফুটকি’ নামে ডাকে।
অস্থিরমতি পাখি। কোথাও একদণ্ড বসে থাকার জো নেই। প্রজনন মৌসুমে নিজ বাসভূমিতে চলে যায়। বিচরণ করে একাকী কিংবা জোড়ায়। প্রজাতির বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ছাড়া ভারত, নেপাল, ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চল এবং পশ্চিম আফ্রিকা পর্যন্ত। প্রজাতিটি বিশ্বব্যাপী হুমকি নয়, তবে স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে। আইইউসিএন এদের কম উদ্বেগ প্রজাতি হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।
পাখির বাংলা নাম: ‘ধলাচোখ ফুটকি’, ইংরেজি নাম: ‘হোয়াইট স্পেক্ট্যাকাল ওয়ার্বলার (White-spectacled Warbler), বৈজ্ঞানিক নাম: Seicercus affinis।
গড় দৈর্ঘ্য ১১-১২ সেন্টিমিটার। ওজন ৪-৬ গ্রাম। মাথা ও ঘাড় উজ্জ্বল ধূসর। পিঠ উজ্জ্বল জলপাই। ডানার প্রান্ত পালক ধূসর। লেজ ধূসর। দেহতল সবুজেটে জলপাই। চোখের বলয় সাদা, মণি বাদামি। ঠোঁট ওপরের অংশ ত্বক কালচে, নিচের অংশ ত্বক বর্ণের। পা হলদে। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন।
প্রধান খাবার: কীটপতঙ্গ। প্রজনন মৌসুম হিমালয়াঞ্চলে এপ্রিল থেকে জুন। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। শুকনো ঘাস দিয়ে প্যাঁচিয়ে কাপ আকৃতির বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১২-১৪ দিন।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 29/09/2017