বাদা ছাতারে | Marsh Babbler | Pellorneum palustre

1845
বাদা ছাতারে | ছবি: ইন্টারনেট

আবাসিক পাখি। প্রাকৃতিক বিস্তৃতি জলাশয় এবং নদীর কাছাকাছি নলবন, ঘাসবনে। দেখতে আহামরি না হলেও মায়াবি ধাঁচের চেহারা। বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে অল্পবিস্তর নজরে পড়ে। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল। সামাজিক পাখি। স্বভাবে চঞ্চল। প্রজননকালীন সময়ে জোড়ায় জোড়ায় বিচরণ করলেও ছোট দল দেখা যায়। রাত্রিযাপনও করে দলবদ্ধভাবে। দলের একটি পাখি যেদিকে উড়ে যায় অন্যরাও সেদিকে উড়তে থাকে।

আবার কেউ যদি পথ হারিয়ে ফেলে অন্যরা ডাকাডাকি করে তাকে পথ চিনিয়ে নিয়ে আসে। সবচেয়ে মজাদার বিষয়টি হচ্ছে এদের দলের কেউ ডিম-বাচ্চা ফুটালে শাবকদের যতœআত্তি দলের সবাই মিলেই করে। অনেক সময় দলের সবাই মিলে অন্যের ডিমে তা দিতে দেখা যায়। মূলত জলাশয় এলাকায়ই বিচরণ আধিক্য। বিশেষ করে শনবন, নলখাগড়ার বনের ভেতর আড্ডা জমায় ভালো। এদের গানের গলা সুমধুর নয়। কর্কশ।

পাখির বাংলা নাম: ‘বাদা ছাতারে’, ইংরেজি নাম: ‘মার্স ব্যাবলার’, (Marsh Babbler), বৈজ্ঞানিক নাম: Pellorneum palustre | এরা ‘জলার ধারের ছাতারে’ নামেও পরিচিত।

গড় দৈর্ঘ্য ১৫ সেন্টিমিটার। ওজন ১৫-২০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। কপালে সাদা টান। মাথা, ঘাড়, পিঠ ও লেজ গাঢ় বাদামি। গলা সাদা। পেট থেকে বস্তিপ্রদেশ পর্যন্ত হালকা সাদার সঙ্গে বাদামি ডোরা। চোখের মণি বাদামি। ঠোঁট শিং বাদামি। পা কালচে।

প্রধান খাবার: শুঁয়োপোকা, গোবরেপোকা ও অন্যান্য কীট-পতঙ্গ। প্রজনন মৌসুম ফেব্রুয়ারি থেকে মে। জলাশয়ের কাছাকাছি ঘাসবন কিংবা লতাগুল্মের ভেতর ডিম্বাকৃতির বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৬ দিন।

লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 13/05/2017

মন্তব্য করুন: