
কীটভুক পাখি। পোকামাকড় শিকারের লোভে সারাদিন বনতলে ঘুরে বেড়ায়। প্রাকৃতিক আবাসস্থল সরলবর্গীয় লতাগুল্মের ঝোঁপঝাড়। পুরুষ পাখির চেহারা বেশ আকর্ষণীয়। স্ত্রী পাখির চেহারা অনেকটাই ম্লান। দেশের স্থায়ী বাসিন্দা নয়, কেবল শীতে পরিযায়ী হয়ে আসে। সাধারণত একাকী বিচরণ করে। প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। স্বভাবে শান্ত। চমৎকার সুরে গান গায়। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত, হিমালাঞ্চল, তাইওয়ান, জাপান, ইন্দোচীন, সাইবেরিয়া, ফিনল্যান্ড, পূর্ব ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত। প্রজাতিটিকে আইইউসিএন ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
পাখির বাংলা নাম: ‘কমলাপাশ বনরবিন’, ইংরেজি নাম: ‘রেড ফ্ল্যাঙ্কড ব্লুটেইল’(Red-flanked bluetail), বৈজ্ঞানিক নাম: Tarsiger cyanurus | এরা ‘কমলাপাশি রবিন’ নামেও পরিচিত।
প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৩-১৪ সেন্টিমিটার। ওজন ১০-১৮ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন। পুরুষ পাখির চোখের ওপর দিয়ে কপালের পাশ কেটে সাদা টান রয়েছে। মাথা, ঘাড়, পিঠ ও লেজ গাঢ় নীল। ডানা ধূসর কালচে। ডানার নিচ থেকে পেটের কাছাকাছি পর্যন্ত দু’পাশে কমলা-লাল রঙের। গলা সাদা। বুক ও পেট পাশুটে সাদা। ঠোঁট নীলচে কালো। পা কালো। স্ত্রী পাখির মাথা, ঘাড় ও পিঠ ধূসর বাদামি। ডানা কমলা বাদামি। লেজ ধূসর বাদামির সঙ্গে নীলের মিশ্রণ। চোখের পাশে সাদাটে রিং। বাদবাকি পুরুষ পাখির মতো।
প্রধান খাবার : কীটপতঙ্গ, পোকামাকড়। প্রজনন মৌসুম জুন। কাপ আকৃতির বাসা বাঁধে। বাসা বাঁধতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শৈবাল, তন্তু, চিকন শিকড়। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৫ দিন।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, 09/04/2017