বাদামি চটক | Asian Brown Flycatcher | Muscicapa dauurica

1927
বাদামি চটক | ছবি: ইন্টারনেট

নিম্নভূমির খোলা নাতিশীতোষ্ণ বনাঞ্চলে বিচরণ করে। পর্ণমোচী সরলবর্গীয় মিশ্র অরণ্যেও বিচরণ রয়েছে। আবার খোলা চাষাবাদ হয় এমন ক্ষেত-খামারেও দেখা যায়। অর্থাৎ উড়ন্ত পোকামাকড় আছে এমন স্থানে এদের ওড়াউড়ি খানিকটা বেশি পরিলক্ষিত হয়। মূলত এরা উড়ন্ত অবস্থায়ই খাবার সংগ্রহ করে। পারতপক্ষে ভূমি স্পর্শ করে শিকার সংগ্রহ করে না।

প্রজাতিটি দেশে পরিযায়ী হয়ে আসে। দেখতে অবিকল ‘বাদামিবুক চটক’ পাখির মতো। আকার আকৃতিতেও তদ্রুপ। দূর থেকে চড়–ই পাখির মতো দেখা যায়। কুতকুতে আদুরে চেহারা। স্বভাবে শান্ত। কিছুটা ভীরু নিরীহ প্রকৃতির পাখি। বেশিরভাগই একাকী বিচরণ করে। প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। এ সময় পুরুষ পাখিটি সঙ্গীকে আকৃষ্ট করতে মধুরসুরে গান গাইতে থাকে। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ব্যতীত ভারত, শ্রীলঙ্কা, হিমালয় অঞ্চল, পাকিস্তান, পূর্র্ব ইন্দো চীন, পূর্ব সাইবেরিয়া ও জাপান পর্যন্ত। অঞ্চলভেদে দুর্লভ হলেও বিশ্বব্যাপী এরা হুমকি নয়।

পাখির বাংলা নাম: ‘বাদামি চটক’, ইংরেজি নাম: ‘এশিয়ান ব্রাউন ফ্লাইক্যাচার’ (Asian Brown Flycatcher/Brown Flycatcher), বৈজ্ঞানিক নাম: Muscicapa dauurica | এরা ‘এশীয় খয়রা চুটকি’ নামেও পরিচিত।

গড় দৈর্ঘ্য ১২-১৪ সেন্টিমিটার। মাথা, ঘাড়, পিঠ ও লেজের গোড়া পর্যন্ত ধূসর বাদামি ডানা এবং লেজের পালক গাঢ় বাদামি। চিবুক ধুসর সাদা। গলা, বুক ও পেট ধুসর সাদাটে। চোখের বলয় সাদা, মনি কালো। ঠোঁট ত্বক বর্ণের সঙ্গে কালচে আভা। পা কালচে।

প্রধান খাবার: পতঙ্গ, মাছি বা ছোট অমেরুদণ্ডী প্রাণী। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন। অঞ্চলভেদে মে-জুলাই। গুল্মঝোপের ভেতর কাপ আকৃতির বাসা বাঁধে। বাসা বানাতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শৈবাল, তন্তু ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৩-১৫ দিন। শাবক উড়তে শেখে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই।

লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 07/04/2017

মন্তব্য করুন:

Please enter your comment!
Please enter your name here

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.