শুক্তিভোজী বাটান | Eurasian Oystercatcher | Haematopus ostralegus

2629
শুক্তিভোজী বাটান | ছবি: ইন্টারনেট

বিরল পরিযায়ী পাখি শুক্তিভোজী বাটান। দেশে কদাচিৎ দেখা মিলে। শীতে পরিযায়ী হয়ে আসে পশ্চিম ইউরোপ, চীন, কোরিয়া এবং মধ্য এশিয়া থেকে। আমাদের দেশে আশ্রয় নেয় নদ-নদীর মোহনায়, উপকূলীয় এলাকার বেলাভূমি কিংবা দ্বীপাঞ্চলের বালুতটে অথবা পাথর-শিলাময় এলাকায়। শরীরে বাহারি রঙের পালক না থাকলেও দেখতে ভারী চমত্কার প্রজাতিটি। কালো-সাদা রঙের পাখিটির দৃষ্টিনন্দন চেহারা দর্শনে হুট করে চোখ ফিরিয়ে নিতে পারবেন না কেউই।

চলাফেরায় একটু অস্থিরভাব ধরা পড়লেও স্বভাবে মোটামুটি শান্ত। বালুতটে একাকী কিংবা বাটান প্রজাতির অন্যসব পাখিদের সঙ্গে মিলেমিশে হেঁটে হেঁটে খাবার সংগ্রহ করে। এরা শুধু বেলাভূমিতেই নয়, শিকার খোঁজে জলে নেমেও। তবে জলে ভেসে কিংবা সাঁতরিয়ে নয়, হাঁটু জলে নেমে উপর্যুপরি এলোমেলো চঞ্চু চালিয়ে খাবার সংগ্রহ করে। এ সময় বেশিরভাগই এরা একাকী বিচরণ করে।

পাখির বাংলা নাম: ‘শুক্তিভোজী বাটান’  ইংরেজী নাম: ‘ইউরেশীয়ান ক্রেস্টারক্যাচার’ (Eurasian Oystercatcher) বৈজ্ঞানিক নাম: Haematopus ostralegus | এরা ‘ইউরেশীয় ঝিনুকমার’ নামেও পরিচিত।

লম্বায় ৪২-৪৫ সেন্টিমিটার। ঠোঁট সোজা ও লম্বা। ঠোঁটের রঙ লাল, ডগা মলিন। গড়ন শক্তপোক্ত ও মোটা। প্রজননকালীন সময়ে ঠোঁট উজ্জ্বল লাল দেখায়। চোখ টকটকে লাল। কপাল, মাথা, পিঠ ঘাড় কালো। ডানা কালো, ডানার প্রান্তে বড় সাদা পট্টি। লেজের ডগা ফ্যাকাসে কালো। থুতনি থেকে বুক পর্যন্ত কালো। পা ও পায়ের পাতা কমলা লাল।

প্রধান খাবার: ছোট ছোট শামুক ও ঝিনুক, কেঁচোসহ অন্যান্য পোকা-মাড়ক। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই। বাসা বাঁধে পাথুরে দ্বীপাঞ্চলের ভূমিতে। ঘাস-লতাপাতা বিছিয়ে ২-৪টি ডিম পাড়ে। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৪-২৭ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় লাগে ২৮-৩২ দিন।

লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, 19/12/2020

মন্তব্য করুন: