
পরিযায়ী পাখি। বিচরণ করে ঘন আর্দ্র পাহাড়ি অরণ্যে। পুরুষ পাখির আকর্ষণীয় রূপ। সমস্ত শরীর যেন গাঢ় নীল চাদরে মোড়া। সে তুলনায় স্ত্রী পাখি অনেকটাই নিষ্প্রভ। এতটাই নিষ্প্রভ যে সাধারণ পাখি দেখিয়ের চোখে স্ত্রী-পুরুষকে ভিন্ন প্রজাতির মনে হতে পারে। ‘বড় নীলমণি’ স্বভাবে খানিকটা চঞ্চল।
অন্যসব চঞ্চলমতি পাখিদের মতো লাফালাফি না করলেও গাছের একই ডালে থেকে এদিক-সেদিক ঘাড় ঘুরিয়ে পোকামাকড় শিকার করে। আবার অকারণেও এদিক-সেদিক ফিরে। কণ্ঠস্বর সুমধুর। ধীরলয়ে গান গায় ‘টি..টিরে..ট্রি’ সুরে। বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, চীন, লাওস, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত। বিশ্বে এরা ভালো অবস্থানে রয়েছে।
পাখির বাংলা নাম:‘বড় নীলমণি’, ইংরেজী নাম: লার্জ নীলটাবা (Large Niltava) বৈজ্ঞানিক নাম: Niltava grandis | এরা ‘বড় নীল চটক’ নামেও পরিচিত।
দৈর্ঘ্য কমবেশি ২০-২২ সেন্টিমিটার। ওজন ২৫-৪০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষের চেহারা ভিন্ন। পুরুষ পাখির মাথা, ঘাড় ও পিঠ গাঢ় নীল। লেজ নীল। লেজের মধ্য পালক কালচে নীল। ডানার প্রান্ত পালক কালো। মুখমণ্ডল এবং গলা কালো। দেহতল ধূসর নীল। ঠোঁট কালচে নীল। পা ধূসর নীল। স্ত্রী পাখির মাথা এবং ঘাড়ের দু’পাশে হালকা নীলের টান। দেহের উপর অংশ লালচে-বাদামি। দেহতল ধূসর বাদামি। ঠোঁট ও পা ধূসর বাদামি।
প্রধান খাবার: কীটপতঙ্গ, পিঁপড়া ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম ফেব্রুয়ারি থেকে জুন। বাসা বাঁধে ভূমি থেকে ৬ মিটার উঁচুতে গাছের ডালে। কাপ আকৃতির বাসা। উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করে শৈবাল গাছের চিকন তন্তু। ডিম পাড়ে ২-৩টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৩-১৪ দিন।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, 28//06/2015