গেছো চড়ই | Eurasian Tree Sparrow | Passer motanus

1903
গেছো চড়ই | ছবি: ইন্টারনেট

চেহারা হুবহু ‘পাতি চড়–ই’ অর্থাৎ আমাদের ঘরের আশপাশে যে চড়–ই দেখা যায় ওদের মতোই দেখতে। মাথার দিকে না তাকালে প্রজাতি শনাক্ত করা কঠিন। আবাসিক পাখি। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, ফিলিপাইন, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, মাইক্রোনেশিয়া, তিউনিসিয়া, জিব্রাল্টার, মিশর, আলজেরিয়া, ইসরাইল ও দুবাই পর্যন্ত। প্রাকৃতিক আবাসস্থল কাঁটাওয়ালা চিরহরিৎ গুল্ম, খেজুর গাছ। এছাড়াও ফল বাগান এবং গৃহকোণে কমবেশি নজরে পড়ে। স্বভাবে ভারি চঞ্চল। ভয়ডর না থাকলেও পাতি চড়–ইদের মতো মানুষের অত কাছাকাছি আসে না। বিচরণ করে ঝাঁকে ঝাঁকে। ঝাঁক বেঁধে চলার কারণে বাজ পাখির শিকারে বেশি পরিণত এরা। তার ওপর ফসলের জমিতে কীটনাশক প্রয়োগের ফলেও জীবনহানি ঘটে ব্যাপক। তথাপিও ওরা বিশ্বে ভালো অবস্থানে রয়েছে।

পাখির বাংলা নাম: ‘গেছো চড়ই’, ইংরেজি নাম:‘ইউরেশিয়ান ট্রি স্প্যারো ’(Eurasian Tree Sparrow), বৈজ্ঞানিক নাম: Passer motanus | এরা ‘লালচেমাথা চড়–ই’ বা ‘ইউরেশীয় গাছচড়–ই’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতি দৈর্ঘ্যে ১৪-১৫ সেন্টিমিটার। ওজন ১৭-৩০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির মধ্যে খানিকটা তফাৎ রয়েছে। পুরুষ পাখির মাথা বাদামি-লালচে। ঘাড় সাদা। ঘাড়ের দু’পাশ সাদা। পিঠ বাদামি। ডানায় বাদামি-কালো রেখার সংমিশ্রণ। ডানার গোড়ার দিকে সাদা পট্টি দেহতলের ময়লা সাদার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। লেজ হালকা বাদামি। গলা ও থুতনি কালো। ঠোঁট কালো। স্ত্রী পাখির পিঠ ঝাপসা বাদামির ওপর খাড়া ডোরা। ডানায় সাদা পট্টি। দেহতল ফ্যাকাসে। ঠোঁট ত্বক বর্ণ। উভয়ের চোখ বাদামি।

প্রধান খাবার: শস্যদানা। এ ছাড়াও পোকামাকড়, ঘাসের কচিডগা, ফুলের মধু ইত্যাদি খায়। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে মে। বাসা বাঁধে দরদালান কিংবা গাছের ফাঁকফোকরে। ডিম পাড়ে ৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১২-১৪ দিন।

লেখক: আলমশাইন।কথাসাহিত্যিক, কলামলেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 17/02/2017

মন্তব্য করুন: