ছোট চিত্রা ঈগল | Indian spotted eagle | Aquila hastata

3549
ছোট চিত্রা ঈগল | ছবি: ইন্টারনেট

ছোট চিত্রা ঈগল স্থানীয় প্রজাতির পাখি। তবে এলাকাভেদে যাযাবর হতে পারে। বিচরণ করে লোকালয়ের আশপাশ হালকা গাছ-গাছালি এলাকায়। ঘন বনাঞ্চল এদের পছন্দ নয়। বরং খোলা এলাকায় বিচরণ করতে পছন্দ করে বেশি। খোলা মাঠ প্রান্তরে উড়ে উড়ে শিকারের খোঁজনেয়। মাঠ-ঘাটে বৃষ্টির জমে থাকা জলে গোসল করে দলবদ্ধভাবে। বিচরণ করে একাকী কিংবা ছোট দলে। এরা জলের ওপর ঝাঁপিয়ে শিকার ধরার চেয়ে ডাঙার ওপরের শিকারের প্রতি মনোযোগী বেশি।

বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, আফগানিস্তান, পূর্ব কাজাখস্তান, ইসরায়েল, তুরস্ক, ইরান, রাশিয়া ও ককেশাস পর্বতমালা পর্যন্ত। এ ছাড়াও ইউরোপ-আফ্রিকার কিছু এলাকায় দেখা যায়। বিশ্বে এদের অবস্থান সন্তোষজনক নয়। আইইউসিএন ইতিমধ্যে এদের লাল তালিকাভুক্ত করেছে। বাংলাদেশেও এরা ভালো অবস্থানে নেই, বিপদাপন্ন প্রজাতি হিসেবে শনাক্ত হয়েছে।

বাংলা নাম: ‘ছোট চিত্রা ঈগল’, ইংরেজি নাম: ‘ইন্ডিয়ান স্পটেড ঈগল’ (Indian spotted eagle), বৈজ্ঞানিক নাম: Aquila hastata | এরা ‘দেশি গুটিঈগল’ নামেও পরিচিত। প্রজাতির অন্যটি ‘বড় চিত্রা ঈগল’ নামে পরিচিত। দেখতেও একই রকম। শুধু আকারে ছোট-বড়।

দৈর্ঘ্য কমবেশি ৫৫-৬৫ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা অভিন্ন। মাথার পেছনের পালক খোঁচা খোঁচা। বয়স্কদের দেহের সব পালক গাঢ় বাদামি। যুবাদের ক্ষেত্রে বাদামির সঙ্গে অসংখ্য সাদা ফুটকি। উড়ার পালক কালচে গাঢ় বাদামি। ঊরুর পালক খাটো। ঠোঁট বড়শির মতো বাঁকানো, অগ্রভাগ কালো, বাদবাকি হলুদ। তবে ঠোঁটের কিনারা হলুদ চামড়ায় আবৃত।

প্রধান খাবার: মাছ, ইঁদুর, সরীসৃপ ও ছোট পাখি। প্রজনন মৌসুম মে থেকে জুন। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। উঁচু গাছ অথবা টাওয়ারের ওপর সরু ডালপালা বিছিয়ে বৃহৎ আকারের বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ২টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৩৬-৪১ দিন। যৌবনপ্রাপ্ত হতে সময় লাগে প্রায় ৩-৪ বছর। গড় আয়ু ২৫-২৬ বছর।

লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, 09/11/2015

মন্তব্য করুন: