
পরিযায়ী পাখি গোলাপি সাত সহেলি। স্লিম গড়ন। সুদর্শনও বটে। প্রাকৃতিক আবাসস্থল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বা ক্রান্তীয় আর্দ্র নিন্মভূমির বন অথবা ক্রান্তীয় পার্বত্য অরণ্য। পতঙ্গভূক পাখি। উড়ন্ত অবস্থায় শিকার ধরতে পারে। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ছাড়া ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চীন, লাওস, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম পর্যন্ত। বিশ্বে এদের অবস্থান তত সন্তোষজনক নয়। ফলে আইইউসিএন প্রজাতিটিকে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।
পাখির বাংলা নাম: ‘গোলাপি সাত সহেলি’, ইংরেজি নাম: ‘রোজি মিনিভেট’, (Rosy Minivet) বৈজ্ঞানিক নাম: Pericrocotus roseus | এরা ‘গোলাপি সাহেলি’ নামেও পরিচিত। দেশে মোট ছয় প্রজাতির সহেলি দেখা যায়।
প্রজাতিটি দৈর্ঘ্যে ১৮-২০ সেন্টিমিটার। ওজন ১৪-১৯ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় তফাৎ আছে। পুরুষ পাখি কপাল, ঘাড় ধূসর। পিঠ ধূসর গোলাপি। ডানার প্রান্ত পালক ধূসর গোলাপির সঙ্গে কালোটান, তার ওপর আলতা লাল রঙের দাগ। লেজ কালো-লাল। গলা ধূসর সাদা। বুকের নিচে থেকে লেজতল পর্যন্ত গোলাপি সাদা। অপরদিকে স্ত্রী পাখির মাথা, ঘাড় ও পিঠ কালচে ধূসর। ডানার প্রান্ত পালক কালো। আর পুরুষ পাখির ডানায় যে জায়গাটায় লালদাগ স্ত্রী পাখির সে জায়গায় জলপাই হলুদ দাগ। লেজ কালো হলুদ। দেহতল হলদে সাদা। উভয়ের ঠোঁট, চোখ ও পা কালো।
প্রধান খাবার: পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের দেখা যায়। কাপ আকৃতির বাসা বাঁধে। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে সরু লতা, শিকড় ও ঘাস। ডিম পাড়ে ২-৩টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৫ দিন।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 26/09/2016