লালপেট ঈগল | Rufous bellied Eagle | Hieraaetus kienerii

2806
লালপেট ঈগল | ছবি: ইন্টারনেট

পরিযায়ী পাখি। শীতে আগমন ঘটে। বিচরণ করে চিরহরিৎ, পর্ণমোচী বনপ্রান্তরে। এ ছাড়াও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০০-১২০০ মিটার উঁচুতেও দেখা মেলে। উঁচু থেকে নামার সময় ডানা না ঝাঁপটিয়ে মেলে ধরে ধীরে ধীরে নিচে নামতে থাকে। প্রজাতির দেখা মেলে একাকি বা জোড়ায়। কোনো অবস্থায় লবণজল এলাকায় বিচরণ করে না। মিঠাজল এদের বিচরণের জন্য উত্তম এলাকা। নিজের শরীরের সমান ওজনের স্তন্যপায়ী প্রাণী বা সরীসৃপ শিকার করতে সক্ষম। শিকার খোঁজে মাঠ-প্রান্তরের ওপর চক্কর মেরে। ওপর থেকে নিশ্চিত হলে কেবল ঝাঁপিয়ে পড়ে। তবে আর যাই করুক না কেন এরা কিন্তু শিকারের লেজের দিকে পারতপক্ষে থাবা বসায় না। এ ক্ষেত্রে টার্গেট থাকে ঘাড় বা পিঠ।

বিশেষ করে এদের নখ গোলাকার এবং পায়ের পাতায় প্যাডের মতো থাকাতে পিচ্ছিল শিকারকে সহজে কাবু করে ফেলতে পারে, নড়াচড়ার তেমন একটা সুযোগ পায় না। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিম ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ চীন, ফিলিপাইন ও মালয় উপদ্বীপ পর্যন্ত। তবে এদের উপস্থিতি কোথাও সন্তোষজনক নয়। আইইউসিএন প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত হিসেবে ঘোষণা করেছে।

পাখির বাংলা নাম: ‘লালপেট ঈগল’, ইংরেজি নাম: ‘রুফাস বেলিড্ ঈগল’, (Rufous-bellied Eagle), বৈজ্ঞানিক নাম: (Hieraaetus kienerii)।

লম্বায় ৪৬-৬১ সেন্টিমিটার। পুরুষ পাখির ৭৩৩ গ্রাম, স্ত্রী পাখির ওজন ৮০০ গ্রাম। প্রসারিত পাখা ১০৫ থেকে ১৪০ সেন্টিমিটার। মাথা, গলা, ঘাড় ধূসর কালো। মাথায় কালো ঝুঁটি। পিঠ কালচে-বাদামি। বুক লালচে-বাদামি। পেট থেকে বস্তিপ্রদেশ পর্যন্ত লালচে। লেজের নিচে সাদার সঙ্গে কালো ডোরা। শিঙ রঙের ঠোঁটের গোড়া হলদেটে, অগ্রভাগ বড়শির মতো বাঁকানো। চোখ লালচে বাদামি। পা হলদেটে, নখ তীক্ষè, ধুসর-কালচে। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের রং ভিন্ন।

প্রধান খাবার: ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, ইঁদুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির সরীসৃপ। প্রজনন মৌসুম ডিসেম্বর থেকে মার্চ। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুম ভিন্ন। উঁচু গাছে সরু ডালপালা দিয়ে মস্তবড় বাসা বাঁধে। বাসা অগোছালো। একই বাসায় ফি বছরেও ঘর বাঁধতে দেখা যায়। ডিম পাড়ে ১-২টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৩৫দিন।

লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 22/07/2016

মন্তব্য করুন: