লালমাথা টিয়া | Plum-headed Parakeet | Psittacula cyanocephala

9071
লালমাথা টিয়া | ছবি: ইন্টারনেট

স্থানীয় প্রজাতির হলেও বিরল দর্শন। কালেভদ্রে দেখা মেলে মিশ্র চিরসবুজ বনে অথবা শাল বনে। দেখা যেতে পারে গ্রামীণ বনাঞ্চলেও। সামাজিক পাখি। ঝাঁক বেঁধে বিচরণ করে। তবে আমাদের দেশে বড় ঝাঁকে নজরে পড়ে না। গড়ন স্লিম। মনোহরণকারী রূপ। পুরুষের তুলনায় স্ত্রী পাখি কিছুটা নিষ্প্রভ। বাংলাদেশ ছাড়াও বৈশ্বিক বিস্তৃতি শ্রীলঙ্কা, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও পূর্ব ভুটান পর্যন্ত। স্বভাবে হিংস । প্রজনন মুহূর্তে স্ত্রী পাখির হিংস তা বেড়ে যায় বহুগুণ।  এরা ভালো পোষ মানে। শেখালে কথাও বলতে পারে। ক্রীড়ামোদী পাখি। খাঁচায় বন্দি অবস্থায় নানা কসরত দেখায়। খেলা করে এটাসেটা নিয়ে। বল আকৃতির গোলাকার কিছু পেলে ঠোঁট দিয়ে ঠেলতে থাকে। বলা যায় সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করে তা নিয়ে।

পাখির বাংলা নাম: ‘লালমাথা টিয়া’, ইংরেজি নাম: প্লাম হেডেড প্যারাকিট (Plum-headed Parakeet), বৈজ্ঞানিক নাম: Psittacula cyanocephala| এরা ‘তাল কেশ টিয়া’ নামেও পরিচিত। অনেকে এদেরকে ‘আলুবোখারা-মাথা পাখি’ নামে ডাকে। আবার হিমালয়াঞ্চলে কেউ কেউ এদেরকে ‘পুষ্প কেশ টিয়া’ নামেও ডাকে।

দৈর্ঘ্য কমবেশি ৩৬ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন। পুরুষ পাখির মাথা গোলাপি রক্ত বর্ণ। ঘাড়ে মালাসদৃশ কালো রেখা। পিঠ হলুদাভ সবুজ। ডানা সবুজ। ডানার গোড়ায় রয়েছে খয়েরি-লাল পট্টি যা স্ত্রী পাখির নেই। নীলাভ-সবুজ লম্বা লেজ। তন্মধ্যে সবচেয়ে লম্বা পালকের প্রান্ত সাদাটে। দেহতল হলুদাভ-সবুজ। উপরের ঠোঁট কমলা-হলুদ, নিচের ঠোঁট কালো। পা সবুজেটে। অপরদিকে স্ত্রী পাখির মাথা ধূসর। ঘাড়ে হলুদাভ বন্ধনী। উপরের ঠোঁট ভুট্টা হলুদ। নিচের ঠোঁট কালচে।

প্রধান খাবার: শস্যবীজ, ছোট ফল, ফুলের পাপড়ি। পোষা পাখি বাদাম, দুধভাত, সবজি খায়। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে মে। গাছের প্রাকৃতিক কোটরে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৯-২৩ দিন।

লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, , ২৯/০৫/২০১৫

মন্তব্য করুন: