
দেশের স্থায়ী বাসিন্দা। বিচরণ করে একাকী কিংবা জোড়ায়। হাঁটে লাফিয়ে লাফিয়ে। ভালো উড়তে পারে না। স্বভাবে চঞ্চল হলেও অন্যসব ছোট প্রজাতির পাখিদের সঙ্গে মিলেমিশে বিচরণ করতে দেখা যায়। নিয়মিত গোসল করে। কণ্ঠস্বর সুমধুর। ‘টিস..টিস..টিস..’ সুরে ডাকে। ডাকাডাকির সময় খুব দ্রুত ঠোঁট ওঠানামা করে। বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও লাওস পর্যন্ত। বিশ্বব্যাপী হুমকি নয়।
প্রিয় পাঠক, এবার অন্য প্রসঙ্গে যাচ্ছি। যদিও ইতিপূর্বে বিষয়গুলো নিয়ে লেখা হয়েছে তারপরেও বাড়তি কিছু লিখতে হচ্ছে এবার। বগুড়া জেলার একজন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ হাবিবুর রহমান ‘Shine birds club (SBC)’ নামে একটি সংগঠন গড়তে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি ফেসবুকে এ নামে একটি গ্রুপও খুলেছেন। এ ছাড়াও পত্রিকায় প্রকাশিত পাখি নিয়ে আমার লেখাগুলোকে একটি পেজে বন্দি করেছেন (https://pakhi.tottho.com) তিনি।
এ পাখির বাংলা নাম: ‘হলুদচোখ ছাতারে’, ইংরেজি নাম: ‘ইয়েলো-আইড ব্যাবলার’ (Yellow-eyed Babbler), বৈজ্ঞানিক নাম: Chrysomma sinense |
এরা দৈর্ঘ্যে ১৮-২৩ সেন্টিমিটার। ওজন ২০-২৫ গ্রাম। মাথা, ঘাড় ও পিঠ বাদামি। ডানা দারুচিনি বাদামি। লেজ মেটে বাদামি। গলা ও বুক সাদা। পেট ও লেজতল ময়লা সাদা। চোখের বলয় কমলা-হলুদ। কালো রঙের ঠোঁট মজবুত ও মোটা। পা ও আঙ্গুল হলুদ। শরীরে তুলনায় লেজ খানিকটা লম্বা। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন।
প্রধান খাবার: ফড়িং, কীটপতঙ্গ, কেঁচো, মাকড়সা। প্রজনন মৌসুম ফেব্রুয়ারি থেকে মে। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। বাসা বাঁধে ঝোপজঙ্গলের ভেতর ছোট গাছের ডালে। পেয়ালা আকৃতির বাসা। বাসা বানাতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে ঘাস-লতা। ডিমের সংখ্যা ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৫-১৬ দিন।
লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 29/01/2016