কাঠ শালিক | Chestnut tailed Starling | Sturnus malabaricus

6806
কাঠ শালিক | ছবি: ইন্টারনেট

এ প্রজাতির অন্যান্য পাখি আমাদের প্রতিবেশী হলেও এদের ভেতর মানুষকে এড়িয়ে চলার প্রবণতা দেখা যায় বেশি। যার ফলে পরিচিত এ পাখি সর্বসাধারণের কাছে অপরিচিত রয়ে গেছে অদ্যাবধি। এদের বিচরণ অপেক্ষাকৃত হালকা বন-বনানীতে। আবার শহরের দর-দালানেও বসত করে। তবে ভূমিতে খুব একটা বিচরণ করে না। আমি গ্রামের বাড়ি গেলে প্রায়ই দেখি এ পাখিদের।

আমার কাছে এদের বেশ সুদর্শন পাখি মনে হয়। গায়ের বর্ণ অতি উজ্জ্বল না হলেও দেখতে ভালোই লাগে। চলাফেরা করে এরা দল বেঁধে আবার জোড়ায়-জোড়ায় কিংবা একাকীও বিচরণ করে। মানুষকে এড়িয়ে চললেও মাঝেমধ্যে বিচরণ করে কোলাহল সম্পূর্ণ এলাকায়। এদের নিয়ে কথা বলতেই প্রসঙ্গক্রমে দেশের বিশিষ্ট পাখি বিশারদ শরীফ খান জানিয়েছেন, এরা দেশে সন্তোষজনকহারে বিচরণ করছে। বিচরণ করছে ঢাকা-শহরেও। তিনি আরো জানিয়েছেন, খিলগাঁও রেল গেটের কাছে একজোড়া পাখিকে বাসা বানিয়ে ডিম-বাচ্চা ফোটাতে দেখছেন দীর্ঘদিন যাবৎ।

এদের বাংলা নাম: ‘কাঠ শালিক’ ইংরেজি নাম: ‘চেস্টনাটটেইলড স্টার্লিং’(Chestnut-tailed Starling), বৈজ্ঞানিক নাম:‘স্টুরনাস মালাবারিকাস’ (Sturnus malabaricus), গোত্রের নাম: ‘স্টুরনিদি’।

আমাদের দেশে প্রায় ৬-৭ প্রজাতির শালিক নজরে পড়ে। যথাক্রমে : ভাত শালিক, গোবরে শালিক, কাঠ শালিক, বামন শালিক, ঝুঁটি শালিক ও গাং শালিক। ‘চিত্রা শালিক’ নামে এক প্রজাতির শালিক সম্পর্কে জেনেছি ড. রেজা খানের ‘বাংলাদেশের পাখি’ নামক গ্রন্থে’। পাখিটা সচরাচর দেখা যায় না। দেখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমি। সৌভাগ্যটা অর্জন হলে সঙ্গে সঙ্গে তা পাঠকদের জানানোর চেষ্টা করব।

কাঠ শালিক লম্বায় ২০-২৩ সেন্টিমিটার। মাথা, ঘাড় ধূসরাভ-রুপালি। থুতনি-গলা সাদা। ঠোঁটের গোড়া নীল, মাঝখানটা সবুজ এবং ডগাটা হলুদ। পিঠ রুপালি ধূসরের ওপর হালকা খয়েরি। ডানার প্রান্তটা কালো। গলা ফিকে লালচের ওপর সাদাটে ধূসরের টান। বুক, পেট পাটকিলে। পা হলদেটে। লেজের উপরিভাগ ধূসর, তলদেশ পাটকিলে।

কাঠ শালিকের খাদ্য তালিকায় রয়েছে কীটপতঙ্গ, ছোট ফল, ফুলের মধু ইত্যাদি। প্রজনন সময় বসন্ত থেকে গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত। বাসা বাঁধে গাছের কোটরে। নরম লতাপাতা বাসা তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ডিমে তা দেয় শুধু স্ত্রী পাখি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৫-১৭ দিন।

লেখক: আলম শাইন। কথাসাহিত্যিক, কলাম লেখক, বন্যপ্রাণী বিশারদ ও পরিবেশবিদ।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ, 31/10/2012

1 COMMENT

  1. কিছুদিন আগে আমি আমার বাসার নিচে কয়েকটি ছেলেদের ৩ টি পাখির বাচ্চা একটি কাপড়ে পেছিয়ে নিয়ে যেতে দেখে ডাক দিলাম তারপর বল্লো যে এগুলো শালিকের বাচ্চা।আমি ছেলেদের অনেক বকাদিয়ে বাচ্চাগুলোকে নিলাম।আর আমি একজন পাখাল,আমার কাছে ৫০ জোড়া খাচার পাখি আছে।আমার সেই অভিজ্ঞতা আছে ছোট পাখি বড় করার।বাচ্চাগুলোর তখন চোখও ফুটে নাই।আল্লাহর রহমতে ৩ জনই বড় হলো উড়াশিখল।হাল্কা হাল্কা খেওয়ার চেস্টা করতো। তখন একজন হঠাত ভয় পেয়ে উড়ে চলে গেল।তারপর খুব চিন্তায় পরেগেলেম যে ও নিজে নিজে খেতে পারবেতো? বাকি দুইজন এখন খেতে পারে।DNA test করে একজন ছেলে আর একজন মেয়ে।কিন্তু কথা হচ্ছে আমি এদেরকে চিনা,কাওন,কেনারি এগুলো খেতে শিখিয়েছি।কিন্তু আপনার লিখা খাবার তালিকা মতো এদের খাওয়ানো হচ্ছে না।এদের কি Future এ কোন problem হবে?
    এদের আমি Wild এও ফিরিয়ে দিতে পারছি না।এরা খাপ খাইয়ে নিতে পারবে না।
    আপনার মতামত জানতে চাচ্ছিলাম।
    অগ্রিম ধন্যবাদ☺

মন্তব্য করুন: